ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়ায়?

অনলাইন ডেস্ক
2021-05-28 10:01:25
ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়ায়?

কোভিড রোগীদের মধ্যে যেহেতু এই ছত্রাক সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেছে, তাই চিকিৎসকরা সবাইকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে বলছেন।

করোনা মহামারীতে বিধ্বস্ত ভারতে নতুন মহামারী হিসেবে দেখা দিয়েছে মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। বাংলাদেশেও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত তিন রোগী শনাক্ত হয়েছেন যাদের একজন মারা গেছেন।

করোনার মধ্যে নতুন মহামারীর প্রাদুর্ভাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কতটা সংক্রামক এই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস? আক্রান্তের শরীর থেকে কি এটি অন্যজনের শরীরে ছড়ায়?

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা মিউকরমাইকোসিস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। এই রোগ বহু আগ থেকেই ছিল এবং এটা ছোঁয়াচে নয়। এটা এমন একটা জীবাণু বা ফাঙ্গাস যা সর্বত্র- মাটি, পানি ও বাতাসে ছড়িয়ে থাকলেও সংক্রমণ ক্ষমতা খুবই কম।

তিনি বলেন, এই ছত্রাক প্রাণীদের বিষ্ঠায়, বাসী খাবার, বাসী ফল, দীর্ঘদিন ধরে সংরক্ষিত খাদ্য সামগ্রী, অপরিস্কার মাস্ক, অক্সিজেন ও আইসিইউ’র হিউমিডিফায়ারের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে।

বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, সুস্থ মানুষের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু কোনো কারণে শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলেই কেবল এই সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে- যেটা ১ লাখে ২০ থেকে ৩০ জন হতে পারে।

ভারতীয় চিকিৎসক নাক-কান-গলা (ইএনটি) বিশেষজ্ঞ অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, ‘মিউকরমাউকোসিস একদমই অন্য কারও থেকে হওয়া সম্ভব নয়। আমাদের শরীরে ৫০০ থেকে ৬০০ রকম ব্যাক্টেরিয়া, ফাঙ্গাস সারাক্ষণই থাকে। এবং সেগুলো বেশির ভাগই শরীরের পক্ষে প্রয়োজনীয়। তেমনই মিউকর থাকে নাকে। এবং মিউকরমাইকোসিস হয়ও নাক থেকেই। তারপর সেটা শরীরের অন্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে কোনোভাবেই সেটা অন্যের শরীরে প্রবেশ করবে না।’

কোভিড রোগীদের মধ্যে যেহেতু এই ছত্রাক সংক্রমণ অনেক বেড়ে গেছে, তাই চিকিৎসকরা সবাইকে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে বলছেন। নাকে কালচে ছোপ, নাক দিয়ে রক্ত পড়া বা কালচে চাপা রক্ত পড়া, দাঁতে ব্যথা, মুখ অবশ হয়ে যাওয়া, মাথা ধরার মতো কিছু উপসর্গের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে বলছেন তারা।

বিশেষ করে যারা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসে ভুগছেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদির ধরে ভুগছেন, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী, অতিরিক্ত ব্রড-স্পেকট্রাম অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা, অত্যাধিক স্টেরয়েড গ্রহণ করা রোগী, কিডনি বা অন্য অঙ্গ-প্রতিস্থাপন করা রোগী এবং চরম অপুষ্টিজনিত রোগীদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।


আরও দেখুন: