বুক জ্বালাপোড়ায় করণীয়
গলা ও বুক জ্বালাপোড়া একটি পরিচিত সমস্যা। যেসব কারণে এটি হয়, তাকে রিফ্লাক্স ডিজিজ বলে। আমরা যেসব খাবার খাই, তা মূলত একমুখী। অর্থাৎ মুখ থেকে খাদ্যনালী, এরপর পাকস্থলি হয়ে পারিপাকতন্ত্রে যায়। যদি কোনো কারণে এ খাদ্য বিপরীত দিকে আসে অর্থাৎ পাকস্থলি থেকে খাদ্যনালী বা মুখে চলে আসে, সেটিকে রিফ্লাক্স ডিজিজ বলা হয়।
এর ফলে প্রথম যে লক্ষণ দেখা দেয়, তা হচ্ছে বুক জ্বালাপোড়া করা। মুখে পানি বা খাবার চলে আসা। বুকে ব্যথা হতে পারে। কাশি বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এছাড়া হার্টের কারণেও এ ধরনের বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে। এজন্য হার্টের রোগের অন্য কারণগুলোর ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। যেমন, উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টরেল, ডায়াবেটিস। পরিবারের কারও হার্টের সমস্যা থাকে বা বয়স কিছুটা বেশি হলে, তাকে নিশ্চিত হতে হবে এ সমস্যা হার্টের সমস্যা কি না।
হার্টের সমস্যা না হলে বুক জ্বালাপোড়া থেকে সুরক্ষা পেতে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করতে হবে। প্রথমত, ওজন বেশি থাকলে নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। কায়িক শ্রমের মাধ্যমে এটি করা ভালো হবে। এরপর খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে হবে। কোনো সময়ই পেটভর্তি খাওয়া যাবে না। এমন কোনো খাবার খাওয়া যাবে না, যাতে এ সমস্যা বৃদ্ধি করে। যেমন, তৈলাক্ত খাবার, দুধ বা দুধের তৈরি জিনিস, চলকলেট ইত্যাদি।
সহজে হজম হয় এমন খাবার খেতে হবে। আশ জতীয় খাবার এক্ষেত্রে সবচেয়ে আদর্শ। কোনোভাবেই খাবারের সময় পানি খাওয়া যাবে না। পানি খেতে হবে কমপক্ষে এক ঘণ্টা পরে। খাবার গ্রহণের পরই শোয়া যাবে না। কমপক্ষে দুই ঘণ্টা পরে ঘুমাতে যেতে হবে। এসব অভ্যাস পরিবর্তন করার পরও ভালো ফলাফল না এলে কিছু ওষুধ খাওয়া যেতে পারে। যেমন, পিপিআই ওষুধ যা ট্যাবলেট আকারে সব দোকানেই পাওয়া যায়।
রমজানে সেটি ইফতারের পরে বা সেহেরির সময় অথবা রাতের খাবারের সময় খেতে হবে। দিনে একটি ট্যাবলেট খেলেই ভালো হয়। রমজানে আমরা অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলছি। এ সময়ে বুক জ্বালাপোড়া থেকে মুক্তি পতে জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলতে হবে। সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।
বুক জ্বালাপোড়াকে সাধারণ রোগ মনে করে অনেকে গুরুত্ব দেন না। অবহেলা করা হলে এর থেকে বড় ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে এ রোগ থাকলে খাদ্যনালী চিকন হয়ে যেতে পারে এমনকি খাদ্যনালীর ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তীব্র হতে পারে।