বিব্রতকর মেছতা, কী করবেন
ছবি: সংগৃহীত
মেছতা বা মেলাসমা নারীদের বেশি হয়। এর ফলে মুখে কালো দাগ দেখা দেয়। বাইরে চলাফেরায় বিব্রত হতে হয়। পুরুষদেরও মেছতা হয়, যার সাথে সূর্যের আলোর সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু মেছতা কেন হয়, এর সাথে কোন কোন বিষয় জড়িত এবং চিকিৎসা কী, বিস্তারিত জানিয়েছেন স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেন গালিব।
তিনি জানান, মেছতা মুখের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা সাধারণত নাকের দুই পাশে হয়ে থাকে। কালো দাগ স্পষ্ট দেখা যায়। দু-তিন কারণে এটি হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে জন্মনিয়ন্ত্রণের পিল গ্রহণ করলে, অন্তঃসত্ত্বা নারী সন্তান প্রসব করার পর এবং নারী-পুরুষ উভয়ের সূর্যের আলোর কারণে হতে পারে। ছোটখাটো আরও কিছু কারণে মেছতা হলেও প্রধানত দায়ী উক্ত তিনটি বিষয়।
নারীদের পাশাপাশি পুরুষের মেছতা হচ্ছে। কারণ ছেলেদের ত্বকে সূর্যের আলো বেশি পড়ে। ত্বক সূর্যের তাপ শোষণে যোগ্য না হলে একটি নির্দিষ্ট জায়গা কালো হয়ে যায়। সাধারণত মেছতা বংশগতভাবে হয় না। তবে মায়ের ওয়াইর স্কিন থাকলে মেয়েও তা পেতে পারে। সেক্ষেত্রে ত্বকের মান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সূর্যের আলোর ক্ষেত্রে একেকজনের ত্বক একেকভাবে সাড়া দেয়। যেমন, ফর্সা ত্বক এক ধরনের সাড়া দেয়; কালো ত্বকে ভিন্ন সাড়া মেলে। আবার কমন স্কিনগুলোর সাড়া এক রকম। ত্বকের মানের ভিত্তিতে কালো দাগগুলো দৃশ্যমান হয়। এসব বিষয় ভালোভাবে জানতে হবে।
ডা. জাকির হোসেন জানান, মেছতা দুই রকম হতে পারে। একটি হচ্ছে এপিডার্মাল হাইপার প্রিভেনশন সুপার ফেসিয়াল। আরেকটা হচ্ছে ডার্মাল হাইপার প্রিভেনশন। একটি লাইট আছে, যা দিয়ে মেছতা কোন শ্রেণীর তা সহজেই দেখা সম্ভব। এপিডার্মাল সুপার ফেসিয়াল হলে সঠিকভাবে একটি সানব্লক ব্যবহার করি, যাতে আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মির কারণে এটা হতে না পারে। বাইরে বের হওয়ার আগে সানব্লকটা ব্যবহার করতে হবে। রাতে ফিরে যে কোনো একটি ব্লিচিং এজেন্ট ব্যবহার করলেই হবে। ব্লিচিং এজেন্টগুলোর মধ্যে সাধারণত হাইড্রোকুইনোন থাকে, ফলিক এসিড থাকে, এসকরবিক এসিড থাকে, এসব দিয়ে আমরা ব্লিচ করব, ব্লিচ করে দিলে আমাদের মেছতা চলে যাবে।
অনেক সময় হাইড্রোকুইনোন দিয়ে ব্লিচ করার পরও মেছতা ফিরে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে আমরা একটা ক্লিগমেজ ফর্মুলা দেই। অর্থ্যাৎ হাইড্রোকুইননের সাথে একটু স্টেরয়েড, একটু ভিটামিন এ ডেরিভেটিভ, ট্রিটিনাইনের কম্বিনেশন করে রাতের বেলা ব্যবহার করলে মেছতা চলে যায়। এরপরও কারও মেছতার সমস্যা ফিরে আসলে কেমিক্যাল পিলিং করতে হবে। ড্রাইকোলিক এসিড, ট্রাইক্লোর এসিটিক এসিড দিয়ে পিলিং করতে হয় বলে জানান তিনি।