মেডিকেল পড়াশোনায় ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং
ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ওরিয়েন্টেশন
বহির্বিশ্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই শব্দটি ব্যাপক প্রচলিত আর পরিচিত। শিক্ষা জীবনের শেষে পেশাগত জীবন শুরু করার আগে নিজের ইচ্ছা বা সাধ্য অনুযায়ী জীবিকার পথ বেছে নেয়া।
ডাক্তারি পেশাতেও এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ডাক্তার হিসেবে আমরা জানি এই পেশায় আছে বিস্তর শাখা প্রশাখা।
সব ব্রাঞ্চে আছে ভালো দিক মন্দ দিক। কোনো স্পেশালিস্ট চিকিৎসক বলবেন না উনার সাবজেক্টে সম্মান, অর্থ, নিরাপত্তা আছে, আছে সহজলভ্যতা। অর্থাৎ কোনো বিষয়ের চিকিৎসক হলে তুলনামূলক ভালোভাবে জীবন নির্বাহ করা যাবে সেটা আসলেও একটা ধাঁধা। এটা আপেক্ষিক একটা বিষয়।
আমার দেখা এমন অনেক পোস্ট গ্রাজুয়েট শিক্ষার্থীদের চিনি যারা সাবজেক্টে ঢুকার পরে হতাশায় ভোগে। তারা আক্ষেপ করে। তারা অনেকেই না বুঝে সাবজেক্ট বেছে নেয়। কেউ কেউ সিনিয়রদের দেখে উৎসাহিত হয়ে আসে। তাদের সামনে সত্যিকার অর্থেই কোনো রোডম্যাপ থাকে না।
আবার এটাও আছে যে, চাহিদা বা পোস্টের বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী অনেক সাবজেক্টে পোস্ট গ্রাজুয়েট কোর্সে ভর্তি হন। আর এর ফলে দেখা যায়, একজন চিকিৎসক কার্ডিয়াক সার্জন হবার পর জেনারেল সার্জারি করে যাচ্ছে। একজন অর্থাৎ মূল বিষয়ের সাথে তার আর কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
আর সেই সাথে সরকারি না বেসরকারি চাকরি, দেশ না বিদেশ, এফসিপিএস নাকি রেসিডেন্সি এসব তো আছেই।
দিন শেষে একটা কথাই ধ্রুব সত্য যে, আমরা সকলেই স্বকীয়। যে যতই আরেকজনের ক্যারিয়ার দেখে অনুপ্রাণিত বা তাকে অনুসরন করুন না কেন, তার নিজের সাফল্যের পথে চলার অভিজ্ঞতা বা চেষ্টা আরেকজন এর মত হবে না। ভিন্ন হবে।
দেশে বিভিন্ন সময় কিছু ব্যক্তিগত বা সংগঠনের আয়োজনে নানা রকম ক্যারিয়ার মেলা বা অনুষ্ঠান দেখা গেছে। যদিও সেটা নিয়মিত না। আর সেখানে সফল চিকিৎসক বা চিকিৎসক উদ্যোক্তাদের মুখ থেকে তাদের পথ চলার অভিজ্ঞতা শোনা যায়। এটা নিঃসন্দেহে নিজের উৎসাহ তৈরিতে সাহায্য করে।
তবে মনে হয় সফল চিকিৎসকদের পাশাপাশি মেডিকেলের সকল ব্রাঞ্চ (বেসিক, প্যারক্লিনিকাল, ক্লিনিক্যাল) এর দেশে বিদেশে পড়ালেখা বা ক্যারিয়ার নিয়ে দিক নির্দেশনা আর শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি প্রশ্ন উত্তর এর সুযোগ থাকা জরুরি। এমনকি জেনারেলপ্র্যাকটিস নিয়ে ও থাকা উচিত গুরুত্বপূর্ণ টিপস। আমরা পেশাজীবী হবার লক্ষ্যেই ডাক্তারি পাস করি। তাই বাস্তবভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা করাই উত্তম।
ইংরেজিতে একটা কথা আছে "First deserve then desire" । আমরা আগে নিজেরা যোগ্য হবার পথে চলা শুরু করি। তাহলেই কেবল desire পূরণ হবে।