স্বাস্থ্যের ডিজির সঙ্গে তর্কে জড়ালেন চিকিৎসক, বহিষ্কারের নির্দেশ

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মো. আবু জাফরের সঙ্গে এক চিকিৎসকের তর্কের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি অপারেশন থিয়েটারে এ ঘটনা ঘটে।

শিশুদের মূত্রাশয় ও প্রজননতন্ত্র–সংক্রান্ত রোগের চলমান চিকিৎসা, অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব পেডিয়াট্রিক সার্জন অব বাংলাদেশ (এপিএসবি) ও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের শিশু সার্জারি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান অডিটরিয়ামে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দিতে আসেন ডিজি মো. আবু জাফর। সেমিনারে যোগদানের আগে তিনি হাসপাতালের বিভিন্ন অংশ পরিদর্শন করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ক্যাজুয়ালটি অপারেশন থিয়েটার পরিদর্শনের সময় কক্ষের ভেতরে টেবিল কেন রাখা হয়েছে—এ নিয়ে ডিজি চিকিৎসকদের প্রশ্ন করেন। এ সময় জরুরি বিভাগের ক্যাজুয়ালটি ইনচার্জ ধনদেব বর্মণের সঙ্গে তার তর্ক হয়। ধনদেব জানান, লেখালেখির প্রয়োজনেই টেবিল রাখা হয়েছে।

তখন ডিজি বলেন, ‘আপনি কার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন, কথাবার্তা হুঁশ করে বলবেন।’ এরপর তিনি নিজের সঙ্গে থাকা লোকজনকে ভিডিও করতে বলেন এবং মন্তব্য করেন, ‘যারা ডিজির সঙ্গে এমন ব্যবহার করে, তারা রোগীর সঙ্গে কেমন ব্যবহার করে?’
চিকিৎসক জবাবে বলেন, ‘আমি রোগীর সঙ্গে অনেক ভালো বিহ্যাব করি। কিন্তু যারা দায়িত্বে আছে, তাদের সঙ্গে আমার বিহ্যাব ভালো না।’

ডিজি আবার বলেন, ‘আপনি তো বিহ্যাবই শিখেন নাই।’
এতে চিকিৎসক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘ঢাকায় তিন দিনের ট্রেনিং করলাম। আপনার দুদিন আসার কথা ছিল, একদিনও আসেননি।’
এ সময় দুজনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য–বিনিময় হয়। চিকিৎসক আরও বলেন, ‘আমাকে সাসপেন্ড করেন, নো প্রবলেম।’

পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে আসেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস এবং উপপরিচালক জাকিউল ইসলাম।

হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডিজি মো. আবু জাফর বলেন, ‘বাংলাদেশের সব হাসপাতালেই ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি রোগী। আমাদের হাসপাতালের সংখ্যা বাড়াতে হবে ও জনবল বাড়াতে হবে। যেকোনো সময় হিসাব করলে দেখা যাবে, সারা দেশে ১৫ হাজার রোগী মেঝেতে থাকে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন করতে গেলে সময়ের দরকার, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের সময় তো খুবই কম। এটি দীর্ঘমেয়াদি বিষয়।’

পরবর্তীতে তিনি শিশুদের মূত্রাশয় ও প্রজননতন্ত্র–সংক্রান্ত রোগের সাম্প্রতিক অগ্রগতি ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন খুলনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক রুহুল আমিন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মো. নাজমুল আলম খান, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. গোলাম ফেরদৌস, এপিএসবির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম এবং ময়মনসিংহ বিভাগের সহসভাপতি মো. মোকারাবিন প্রমুখ।