যেসব কারণে চুল পড়ে
চুল পড়ার কারণগুলো সবার জন্য একই না হলেও কিছু সাধারণ কারণে চুল পড়ার মাত্রা বেড়ে যায়।
১.স্বাভাবিক কারণে: আমাদের মাথায় যে পরিমাণ চুল থাকে তার ৯০ শতাংশ চুল লম্বা বা গ্রথ হয় আর বাকি ১০ শতাংশ চুল বিশ্রামে থাকে। এই চুলগুলোই মূলত ঝরে পড়ে। এই স্বাভাবিক কারণে চুল পড়লে সেখানে নতুন করে চুল গজায়। বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১৫০টি চুল পড়া স্বাভাবিক।
২.পুষ্টিজনিত কারণে: শরীরের পুষ্টি এবং ভিটামিনের ওপর চুলের স্বাস্থ্য নির্ভর করে। অতিরক্ত চিনি বা চর্বিযুক্ত খাবার এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার বেশি পরিমাণে খেলে কোনো একটি উপাদানের ঘাটতির কারণে চুল পড়তে পারে। এজন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় প্রোটিন, ভিটামিন, আমিষ, শর্করা, খনিজ জাতীয় খাবার যুক্ত করতে হবে।
৩. হরমোনের কারণে: নারী বা পুরুষের চুল পড়ার জন্য অ্যান্ড্রোজেনিক হরমোন অন্যতম দায়ী। এই হরমোনের পরিমাণ বেড়ে গেলে মাথার চুল বেশি পরিমাণ পড়ে। এছাড়া থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা কম বা বেশি হলে চুল পড়তে পারে। গর্ভাবস্থায় এবং বাচ্চা জন্মের পর সাধারণত এই সমস্যা বেশি হয়ে থাকে।
৪. চুলের যত্নে শ্যাম্পু ব্যবহার: চুল ঝরে পড়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে যথাযথ পণ্যের ব্যবহার না করা। বার বার শ্যাম্পু বা তেল পরিবর্তনের কারণেও চুল পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এজন্য তেল এবং শ্যাম্পু কেনার আগে এর উাপাদানগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া জরুরি। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার ব্যবহার করা উচিত।
৫. চুলে অতিরিক্ত হিট দেওয়া: হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকানোর কারণে চুল ভঙ্গুর হয়ে যায়। এজন্য হেয়ার ড্রেসার ব্যবহারের সময় কুলিং সুইচ অন রাখা। সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে সাধারণ ফ্যানের বাতাসে চুল শুকানো। চুল রং করা বা কেমিক্যাল ব্যবহার চুল পড়ার অন্যতম কারণ।
৬. থেরাপি বা ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: ক্যানসার চিকিৎসায় কেমোথেরাপি দিলে চুল পড়ে যেতে পারে। তবে থেরাপির শেষ ডোজ দেওয়ার তিন থেকে চার মাস পরে নতুন চুল গজায়। কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও চুল পড়ে যেতে পারে। বড় ধরনের অস্ত্রোপচারের পরে অ্যান্টি-বায়োটিকের কারণেও এটা হতে পারে। এজন্য দীর্ঘ বিশ্রামই নিলে এবং খাবারে প্রটিনের মাত্রা বাড়ালে সমস্যার সমাধান হতে পারে। এছাড়া অ্যানিমিয়া, টাইফয়েড, জন্ডিস, ম্যালেরিয়া, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের পরেও চুল পড়তে পারে।
৭. চিরুনি: মাথা আঁচড়ানোর চিরুনিও হতে পারে চুল ঝরে পড়ার অন্যতম কারণ। চিরুনিতে থাকা ময়লার কারণে সৃষ্ট জীবাণু ও ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়। ফলে মাথার ত্বকে চুলকানি, ইনফেকশন এবং ফাঙ্গাসের সৃষ্টি হয়। এতে চুল পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এজন্য নিয়মিত চিরুনি পরিষ্কারের জন্য গরম পানিতে ভিনেগার মিশিয়ে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখাতে হবে। এরপর ভালোবাবে পনিতে ধুয়ে নিলে চিরুনিটি ব্যাকটেরিয়া ও জীবানুমুক্ত হবে। ভেজা চুল আঁচড়ালে করলেও চুল পড়ার হার বেড়ে যায়।
৮. ছত্রাক সংক্রমণ: ছত্রাক সংক্রমণের কারণে মাথায় খুশকি হলে চুল পড়ার হার বাড়ে। সে ক্ষেত্রে ছত্রাকরোধী শ্যাম্পু ব্যবহারে খুশকি সমস্যার সমাধান হতে পারে।