টাকে চুল গজানোর ওষুধ আবিষ্কার!
পরীক্ষায় দেখা যায়, এতে অংশ নেওয়া রোগীদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে চারজনের ৮০ শতাংশ চুল গজিয়েছে
টাক মাথায় চুল গজানো ও টাক ঠেকানোর ওষুধ আবিষ্কারের দাবি করেছেন গবেষকরা। এ সাফল্যকে ‘গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’ বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি কনসার্ট ফার্মাসিউটিক্যালস। অ্যালোপেসিয়া তথা টাক রোগকে নিরাময়যোগ্য নয় বলে মনে করা হয়। খবর নিউইয়র্ক পোস্টের।
কনসার্ট ফার্মাসিউটিক্যালস নতুন এ ওষুধের পরীক্ষা চালিয়েছে। এ ওষুধ দিনে দুবার সেবন করলে চুল পড়া কমার পাশাপাশি দ্রুত পড়ে যাওয়া চুল আবার গজাতে সাহায্য করে।
তৃতীয় ধাপের পরীক্ষায় দেখা যায়, এতে অংশ নেওয়া রোগীদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে চারজনের ৮০ শতাংশ অথবা তাদের অধিকাংশের চুল এক বছরের মধ্যে আবার গজিয়েছে।
বিশেষ করে সিটিপি-৫৪৩ নামের এ ওষুধ অ্যালোপেসিয়া অ্যারিয়াটা তথা টাক রোগ প্রতিরোধে কাজ করে। অ্যালোপেসিয়া অ্যারিয়াটা চুলের লোমকূপে আক্রমণ করলে মাথার কিছু অংশের চুল পড়ে যায় অথবা পুরো মাথায় টাক পড়ে যায়।
যুক্তরাষ্ট্রেই কেবল ৬৮ লাখ মানুষ টাক সমস্যায় ভুগছে। চুল হারানোর কারণে এসব মানুষের অনেকে মারাত্মক পর্যায়ের বিষণ্নতায়ও ভোগেন।
চলতি সপ্তাহে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার সময় এ ওষুধ আবিষ্কারের কথা জানায় কোম্পানিটি। এক বিবৃতিতে বলা হয়, টাকের চিকিৎসায় এটি ‘গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’। বর্তমানে মাথায় টাক পড়ার কোনো কার্যকর চিকিৎসা নেই।
সর্বশেষ পরীক্ষার জন্য টাক সমস্যায় আক্রান্ত ৭০৬ রোগীকে ২৪ সপ্তাহের জন্য বাছাই করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপে বসবাসরত এসব ব্যক্তির বয়স ১৮ থেকে ৬৫ বছর। পরীক্ষার শুরুতে এদের চুলের পরিমাণ ছিল মাত্র ১৬ শতাংশ। কারও চুলই ৫০ শতাংশের বেশি ছিল না।
টাক রোগীদের তিন দলে ভাগ করা হয়। একটি দলকে ৮ মিলিগ্রাম করে দিনে দুই ডোজ, দ্বিতীয় দলকে ১২ মিলিগ্রাম করে দুই ডোজ বড়ি এবং তৃতীয় দলটিকে প্লাসিবো (মূলত ওষুধ নয়) দেওয়া হয়।
যাদের প্লাসিবো দেওয়া হয়, তাদের তুলনায় যাদের ওষুধ দেওয়া হয়েছে, তাদের ‘উল্লেখযোগ্যসংখ্যক’ ব্যক্তির মাথায় চুল গজাতে দেখা যায়। রোগীদের প্রায় ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ দেখেন, তাদের মাথায় প্রায় ৮০ শতাংশ চুল আবার গজিয়েছে। যারা কম মাত্রার ডোজ নিয়েছেন, তাদের ৩০ শতাংশের মতো চুল গজিয়েছে।
তবে পরীক্ষায় অংশ নেওয়া কিছু রোগীর মধ্যে মাথাব্যথা ও ব্রণের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অবশ্য ওষুধ কোম্পানিটি জানায়, ওষুধটি সহনীয় পর্যায়ের। মাত্র ৫ শতাংশ রোগী মাথাব্যথা, ব্রণ ও ইনফেকশনের অভিযোগ করেছেন।
ইয়েল ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ব্রেট কিং বলেন, ‘চ্যালেঞ্জিং টাক সমস্যার চিকিৎসায় এ ওষুধ আবিষ্কার খুবই প্রয়োজন। চলমান গবেষণার থ্রাইভ-এএ১ ট্রায়ালে পাওয়া ফলাফল অনুযায়ী, সিটিপি-৫৪৩ টাকের চিকিৎসায় সম্ভবত গুরুত্বপূর্ণ থেরাপি হিসেবে কাজে দিতে পারে।’
তৃতীয় পর্যায়ে আবার ৫১৭ জনের ওপর পরীক্ষা চালানোর পর পাওয়া তথ্য উপস্থাপন করতে চায় ওষুধ কোম্পানিটি। এরপর আগামী বছর অনুমোদনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) কাছে আবেদন করবে তারা।