কিটো-ডায়েটে ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষতি, করণীয়
কিটো-ডায়েটে প্রোটিনের মাত্রা অনেক বেশি থাকে। এতে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আমরা সুষম খাদ্যে (ব্যালেন্সড ডায়েট) বিশ্বাসী। সুষম খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেট অবশ্যই ৫০-৬০ ভাগ থাকবে। বিপরীতে কিটো-ডায়েটে কোনো কার্বোহাইড্রেট রাখা যায় না। তাহলে কিটো-ডায়েট কিন্তু ব্যালেন্সড ডায়েটের বাইরে চলে গেল।
বৈজ্ঞানিকভাবে ব্যালেন্সড ডায়েট আমাদের শরীরের জন্যে খুব প্রয়োজনীয়। কিটো-ডায়েট শুরু করলে শরীরে কিটোন-বডি প্রডাকশনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তি কিটো-ডায়েট শুরু করলে তারও কিটো-অ্যাসিটোসিস হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।
কিটো-ডায়েটে প্রোটিনের মাত্রা অনেক বেশি থাকে। এতে কিডনির ওপর অনেক চাপ পড়ে এবং কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
আমার কাছে কিটো-ডায়েট করে রেনাল ফেইলর দেখা দিলে এক ডায়াবেটিক রোগী এসেছিলেন। আমি তাকে এটি থেকে বিরত থাকতে বলি। রোগী তখন বলেন, কিটো-ডায়েটে তার ছয় কেজি ওজন কমেছে এবং তিনি আরও কিছুদিন এটি করতে চান। আমি তাকে বললাম, ওজন ছয় কেজি কমাতে গিয়ে আপনি কিডনির বারোটা বাজিয়ে ফেলেছেন। তার আগে যেখানে সেরাম ক্রিয়েটিনিন ১ দশমিক ৪ ছিল, সেটি বেড়ে ১ দশমিক ৭ হয়ে গেছে। অনেক বোঝানোর পরে তিনি নিজেও বুঝতে পারলেন কিডনিতে প্রভাব পড়ছে এবং কিটো-ডায়েট বন্ধ করলেন।
কিটো-ডায়েটের আরেকটি দিক হলো, প্রথম দিকে ওজন কমবে। কিন্তু পরে শ্যুটআপ করবে, ওজন আবার বাড়তে শুরু করবে। কারণ, এনার্জি তো আপনি গ্রহণ করছেন, এর প্রভাবে ওজনও বাড়বে।
আমার পরামর্শ হলো, ডায়াবেটিক রোগীকে অবশ্যই সুষম খাদ্য খেতে হবে। গবেষণাতেও পাওয়া গেছে, ডায়াবেটিক রোগীদের খাবারে অবশ্যই ৫০-৬০ ভাগ কার্বোহাইড্রেট থাকতে হবে।
ডায়াবেটিসকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। ডায়াবেটিসের চিকিৎসা সঠিকভাবে নেওয়া হলে এবং কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবনযাপন করতে পারবেন তিনি।