ব্রিটিশ ও বাংলাদেশের চিকিৎসকদের আন্দোলন, তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়
ব্রিটিশ ও বাংলাদেশের চিকিৎসকদের আন্দোলনের তফাৎ প্রসঙ্গে লিখেছেন খুলনা বিএমএ’র সভাপতি ডা. বাহারুল আলম
‘ব্রিটিশ মেডিকেল এসোসিয়েশন-এর জুনিয়র ডক্টরস কমিটি’ যে ভাষায় এবং যে প্রাধান্য নিয়ে তাদের আন্দোলন নিয়ে secretary of state-কে পত্র দিয়েছে– তার মাধ্যমে জুনিয়র চিকিৎসকদের শক্তিশালী নেতৃত্ব ও ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠেছে। কোনরকম নতজানুতা বা আপোষকামিতার প্রকাশ ঘটেনি সেই পত্রে। উপরন্তু একমাস পূর্বে কেন আলোচনায় বসা হল না– সে বিষয়ে কৈফিয়ত চাওয়া হয়েছে।
নিজেকে তৈরি করা বা গড়ে ওঠার মধ্য দিয়েই আত্মপরিচয়ের নেতৃত্ব গড়ে ওঠে। ব্রিটিশ রাষ্ট্রের জুনিয়র চিকিৎসকরা বেড়ে উঠেছে এতোটাই শক্তিশালী মানসিকতা নিয়ে যে- তাদের মূল ‘ব্রিটিশ মেডিকেল এসোসিয়েশন’ নয়, জুনিয়রদের কমিটি সরাসরি সেক্রেটারির সাথে আলাপ আলোচনায় অংশগ্রহণের ক্ষমতা রাখে। এখানেই যে চিকিৎসক ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটেছে সেটা আমাদের দেশের জুনিয়র চিকিৎসক দূরে থাক, মূল সংগঠনের নেতারাও এভাবে রাষ্ট্রের কর্ণধারদের সাথে আচরণ করার মানসিকতা রাখে না। পার্থক্যটা আমাদের চিকিৎসকদের গড়ে ওঠার মধ্যেই নিহিত।
নিজেকে রাষ্ট্রের নানা গোষ্ঠী ও শক্তির কাছে সমর্পিত রেখে কখনই চিকিৎসক ব্যক্তিত্ব হিসাবে গড়ে ওঠা সম্ভব নয়। তখনই তাদের আত্মপরিচয়ের সংকট সৃষ্টি হয়, পরিচয়েই কেবল চিকিৎসক। দুর্বল চিত্তের চিকিৎসকদের চেতনা কখনই শক্তিশালী হয় না এবং তাদের এসোসিয়েশন বা সংগঠনও দুর্বল থাকে।
ব্রিটিশ ও আমরা –উভয়েই চিকিৎসক পরিচয় হলেও, কবির ভাষায় বলতে হয়
“ তুমিও মানুষ , আমিও মানুষ,
তফাৎ শুধু শিরদাঁড়ায়”
চিকিৎসকদের প্রতি আহ্বান– রাষ্ট্রের হেলথ সার্ভিস থেকে বিচ্ছিন্ন থেকো না, প্রাধান্য ও কর্তৃত্বের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করো। তার জন্য– আত্মকেন্দ্রিকতা ও আত্মপরিচয়ের সংকট দূর করে সার্বভৌম চিকিৎসক ব্যক্তিত্ব হিসাবে গড়ে ওঠো।