জরায়ু ক্যান্সারে দায়ী এইচপি ভাইরাস
প্রাথমিকভাবে জরায়ুমুখ ক্যান্সার ধরা পড়লে খুব সহজেই নিরাময় সম্ভব। নিয়মিত ওষুধ সেবনে মুক্তি পাওয়া যায়
ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সারের (আইএআরসি) তথ্যে, বাংলাদেশে নারীরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন স্তন ক্যান্সারে। এরপরের অবস্থান জরায়ুমুখের ক্যান্সারের। প্রতি বছর জরায়ুমুখের ক্যান্সারে দেশে ৮ হাজার ৬৮ জন আক্রান্ত হয়। তাদের মধ্যে ৫ হাজার জনের মৃত্যু হয়। বিশ্বে রোগটিতে প্রতিবছর প্রায় সাড়ে ৫ লাখ নারী আক্রান্ত ও প্রায় ৩ লাখ মৃত্যুবরণ করে।
এ বিষয়ে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. মনোয়ারা হক বলেন, ‘জরায়ুমুখ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হিউম্যান প্যাপিলোমা (এইচপি) নামের এক ধরনের ভাইরাস। এইচপি ভাইরাস বিভিন্ন ধরনের আছে, যার মধ্যে এইচপিভি-১৬ ও ১৮ জরায়ুমুখ ক্যান্সারের জন্য সবচেয়ে বেশি মারাত্মক।’
তিনি বলেন, ‘বাল্যবিয়ের শিকার ও অধিক সন্তান জন্ম দেওয়া নারীরাই জরায়ুমুখ ক্যান্সারের ঝুঁকিতে বেশি থাকেন। নারীর ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার বিষয়টি এর সাথে জড়িত। যেসব অল্পবয়সী নারী পিরিয়ডের সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে পারে না, তাদের বিভিন্ন জীবাণু আক্রমণ করতে পারে। এখন অল্প বয়সী বিশেষ করে ৯ থেকে ১৫ বছর বয়সী মেয়েদের জন্য এইচপিভি টিকা রয়েছে। একটু দামি হলেও এ টিকা নেওয়া ভালো।’
আরেক গাইনি রোগ বিশেজ্ঞ ডা. শাহানা আক্তার বলেন, ‘দেশে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকালে নোংরা কাপড় ব্যবহার করতে দেওয়া হয়। তাদের স্কুল পর্যন্ত বন্ধ করে দেন অনেক অভিভাবক। এখন বাজারে স্বল্পমূল্যে দেশে তৈরি বিভিন্ন ধরনের প্যাড পাওয়া যায় এবং তারা এসব সহজেই ব্যবহার করতে পারে। জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাড়াতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জরায়ুমুখ ক্যান্সার ধরা পড়লে খুব সহজেই নিরাময় সম্ভব। নিয়মিত ওষুধ সেবনে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে দেরিতে ধরা পড়লে তা অনেক সময় জীবনকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলতে পারে। অনেক সময় চিকিৎসকেরও কিছু করার থাকে না।’ সূত্র বাসস।